সাফল্য অর্জনে দৈনিক ৬টি সহজ ধাপ নিয়ে আলোচনায়, প্রথমে কিছু বিশ্লেষণ দরকার। যেমন—আমরা হয়তো কখনো ভেবেই দেখিনি, প্রতিদিন আমরা কত রকম প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হই।
কারো অনুগ্রহ বা ভালোবাসা থেকে শুরু করে নিজের কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতি অথবা নিজেকে আরো আত্মবিশ্বাসী করে তুলতে, ব্যস্ত সময় পার করতে হয়।
এক্ষেত্রে অধিকাংশ সময় দেখা যায়, যথার্থ পরিকল্পনার অভাবে অনেক ক্ষেত্রেই তা অর্জনে সফল হই না। কিন্তু কাজগুলো যদি একটু পূর্বপরিকল্পিত হয়, তাহলে সাফল্য খুব দূরে থাকতে পারে না।
আমরা প্রতি দিন ও রাতের ৬টি সহজ ধাপের আলোচনায় সাফল্য অর্জন নিয়ে কথা বলব। এগুলো শুধুমাত্র আপনার সাফল্যই এনে দেবে না, বরং আপনাকে আরো বেশি আত্মবিশ্বাসী করবে। আপনি শুধু আপনার কাজগুলো নির্বাচন করুন, আর তা সমাধানে দৃঢ় থাকুন।
১. আগের রাতেই কাজের পরিকল্পনা করুন
দেখুন, আমরা হয়তো কেউই আমাদের অসফল দিনগুলোর হিসাব করি না অথবা কেন দিনগুলো সফল নয় ভেবে দেখি না। অধিকাংশ সময় দেখা যাবে দিনগুলো পরিকল্পিত ছিল না।
সে-কারণে আগেই পরবর্তী দিনের পরিকল্পনা করে নেওয়া ভালো। এতে কোনো কাজ বাদ পড়বে না এবং প্রয়োজনানুযায়ী নতুন কাজ সংযুক্ত বা বিয়োজন করা যাবে।
তা ছাড়া এতে কাজের প্রতি দায়িতও বাড়বে—যা একটি সফল দিন উপহার দিতে সক্ষম। আর এই একটি করে দিন মিলেই রচিত হবে একজন সফল মানুষের জীবনগাঁথা।
২. দিনের শুরুতেই পরিকল্পনাগুলো শব্দ করে পড়ুন
পরিকল্পনাগুলো শব্দ করে পড়ার ফলে সেগুলো আপনার সচেতন এবং অবচেতন দুই মনেই জায়গা করে নিবে। আমাদের মস্তিষ্ক যতই শক্তিশালি হোক, দেখা যায় তা সব তথ্য ধরে রাখতে পারে না।
তাই শব্দ করে পড়লে তা আমাদের স্মৃতিতে সুসংহতভাবে থাকে। তা ছাড়া এটি বারবার চিন্তায় ধারণ করার মাধ্যমে সচেতনভাবে কর্মপরিকল্পপনায় যে কোনো সময় পরিবর্তন আনা যায়—যা লক্ষ্য নির্ধারণ ও নতুনত্ব আনয়নে সহায়তা করে।
সর্বদা কর্মপরিকল্পনা মাথায় রাখতে পারলে, তা অতি দ্রুত লক্ষ্য বাস্তবায়ন করে সাফল্য অর্জনে সহায়ক হয়।
৩. নিজের উপর ভরসা করে আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করুন
আমরা দুইভাবে আমাদের মনের উপর ইতিবাচক প্রভাব রাখতে পারি। প্রথমত, শাব্দিকভাবে। দ্বিতীয়ত, আত্মকথনের মাধ্যমে।
ৱতবে দ্বিতীয়টি বেশি কার্যকরী, কারণ আত্মকথন সরাসরি আমাদের মনের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে—যা সাফল্যের পথে আত্মবিশ্বাস বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়।
যদি দিনে কয়েকবার মনে মনে সাফল্যের উপায় চিন্তা করা যায়, তবে সাফল্য অর্জনের আত্মবিশ্বাস আরো সুসংহত হয়—যা লক্ষ্য অর্জন সহজ করে দেয়।
৪. মন চাঙ্গা রাখতে কর্মবিরতি পালন করুন
বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, কর্মবিরতি শুধুমাত্র বিনোদন হিসেবেই কাজ করে না, বরং তা আমদের কাজের প্রতি আগ্রহ ও সক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে।
এটি আমাদের মনকে অতিরিক্ত চাপ থেকে মুক্তি দেয় এবং সাথে সাথে কর্মক্ষমতাও বৃদ্ধি করে। তাই সাফল্য অর্জনের জন্য যন্ত্রের মতো নিরবিচ্ছিন্ন কাজ না-করে একটু বিরতি দরকার।
যেমন—বাইরে নির্মল পরিবেশে কিছুটা ঘোরাঘুরি করা অথবা বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেয়া। আগেই বলেছি, এটি বিনোদনের পাশাপাশি আমাদের মানসিক চাপ কমিয়ে সৃজনশীলতা বৃদ্ধি করে।
৫. ভাগ্যের উপর ছেড়ে না-দিয়ে শতভাগ শক্তিপ্রয়োগ করুন
দুটি জিনিস : দৃষ্টিভঙ্গি ও উদ্যম সর্বদা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। শুধুমাত্র নিজের ক্ষমতার সীমা না-দেখে অন্যের কাজের সীমাও দেখতে হবে। এটি নিজের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বৃদ্ধির সাথে সাথে উদ্যমকেও বাড়াতে সক্ষম।
আমরা সব কাজ করতে সমান আগ্রহী নই, কিন্তু সব কাজই আমাদের সাফল্য অর্জনের পথে গুরুত্বপূর্ণ। তাই সবদিক দেখেই আমাদের বুঝতে হবে কাজটি কতখানি গুরুত্বপূর্ণ।
সে-কারণে কাজের প্রতি আমাদের শতভাগ নিষ্ঠাবান হতে হবে, আর কোনো কাজকেই কম গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করা যাবে না।
৬. পরবর্তী দিনের উদ্যম যোগাতে আত্মবিশ্বাসের সাথে বিশ্রাম নিন
কাজের শক্তি যোগাতে বিশ্রাম আমাদের জন্য অত্যাবশ্যক। বিশ্রাম শুধু শরীরেই প্রশান্তি দেয় না, বরং তা আমাদের মনকেও করে তোলে আরো সৃজনশীল।
তাই উপযুক্ত বিশ্রাম কাজেরই একটি অংশ। সাফল্য উপভোগের জন্যেও আমাদের শারীরিক সুস্থতার প্রয়োজন রয়েছে। সে-কারণে সাফল্য অর্জনের জন্যে আমাদের শরীরকে সর্বদা সুস্থ-সবল ও প্রস্তুত রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
—ডেস্ক মোটিভেশন
…………………
পড়ুন
দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে ১৭টি পরামর্শ
আমন্ত্রণ